সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে অনিয়ম-দুর্নীতি অব্যাহত
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে দিন দিন বাড়ছে অনিয়ম ও
দুর্নীতি, যা বন্দিদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ও কারা
ব্যবস্থাপনায় প্রশ্ন তুলছে। কারাগারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সিট বাণিজ্য, মাদক প্রবেশ, এবং বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে।
যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানোর আশ্বাস দেয়া হয়েছে, তবুও বাস্তবে পরিস্থিতি ভিন্ন।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের শপথবাক্য “রাখিব
নিরাপদ, দেখাবো আলোর পথ” যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না বলে
অভিযোগ উঠছে। কারাগারের অভ্যন্তরে হসপিটালের বেড বরাদ্দ থেকে শুরু করে সিট বাণিজ্য,
ওয়ার্ড বাণিজ্য, এবং খাবার চড়া দামে বিক্রির
মতো নানা অনিয়ম চলছে। বন্দিদের অভিযোগ, এসব অনিয়মের মাধ্যমে
প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা।
পরিদর্শন কমিটির কার্যক্রম ৬ মাস ধরে বন্ধ থাকায়
কারাগারের অভ্যন্তরে তদারকির ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বন্দিদের অভিযোগ অনুযায়ী, নতুন পরিদর্শন কমিটি গঠন করা হলে দুর্নীতি প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখতে
পারে।
বিশেষ করে, সিলেট আদালতের
হাজতখানা থেকে আসামি আনা-নেয়ার সময় কৌশলে মাদক কারাগারে প্রবেশ করানো হয়। সম্প্রতি
এক চালানে ইয়াবা আটক হলেও, এরকম আরও চালান নিয়মিতভাবে
কারাগারে প্রবেশ করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কারাগারে
পেশাজীবী সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে পরিদর্শন কমিটি গঠন করা হলে বন্দিদের অভিযোগ
শোনা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, “কারাগারে আগের তুলনায় এখন অনিয়ম কম হওয়ার কথা। তবে, কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।”
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহমুদ মুরাদ
বলেন, “কারাগারের প্রতি কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। তবে,
কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা
নেয়া হবে।”
২০১৯ সালে ধোপাদিঘীরপাড় থেকে বাদাঘাট এলাকায়
স্থানান্তরিত হওয়া এই কারাগারটি ২০০০ বন্দির ধারণক্ষমতা সম্পন্ন হলেও বর্তমানে এর
ব্যবস্থাপনায় নানা সংকট দেখা দিয়েছে।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ
করতে দ্রুত নতুন পরিদর্শন কমিটি গঠন এবং কারাগারের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত
করা অত্যাবশ্যক। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান
জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও নাগরিক সমাজ।