বালাগঞ্জে ‘আত-তাকওয়া’ প্রকল্প পরিদর্শনে প্রবাসী কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ



সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ানবাজার ইউনিয়নের মুক্তারপুর (রুকনপুর) এলাকায় গড়ে উঠছে এক অনন্য মানবিক উদ্যোগ— ‘আত-তাকওয়া’ প্রকল্প।
 রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকের উদ্যোগে নির্মিতব্য এই প্রকল্পটি সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে নিবেদিত হবে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এই মহৎ প্রকল্পের অগ্রগতি সরেজমিনে দেখতে আসেন গ্রেটার সিলেট ডেভেলাপমেন্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল (জিএসসি) ইউকে সাউথ ইস্ট রিজিওনের জয়েন্ট ট্রেজারার, গহরপুর এসোসিয়েশন ইউকের সভাপতি ও
আত-তাকওয়া’ প্রকল্পের অন্যতম দাতা সদস্য মো. আবুল মিয়া। 
পরিদর্শনকালে তিনি প্রকল্পের নানা দিক ঘুরে দেখেন এবং এর নির্মাণকাজের প্রশংসা করেন।

প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আবুল মিয়া বলেন—আত-তাকওয়া’ শুধু একটি উন্নয়ন প্রকল্প নয়, এটি আমাদের সমাজের জন্য এক মানবিক বিপ্লব। এতিম ও অসহায় শিশুদের আশ্রয় দেওয়া, বয়স্কদের সেবার ব্যবস্থা করা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার সুযোগ তৈরি করা—এসবই আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। আমি মনে করি, এই উদ্যোগ শুধু মুক্তারপুর বা বালাগঞ্জ নয়, পুরো বাংলাদেশে একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।


তিনি আরও বলেন, আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা একটু সুযোগ পেলে নিজেদের জীবন পাল্টে ফেলতে পারেন। এই প্রকল্প তাদের সেই সুযোগ করে দেবে। তাই আমরা সবাই মিলে এই মহৎ উদ্যোগকে সফল করতে এগিয়ে আসা উচিত। 

পরিদর্শনকালে উপস্থিতি ছিলেন  রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকের কোষাধ্যক্ষ যুক্তরাজ্য প্রবাসী সমাজসেবী ছানাওর আহমদ সিতাব আলী, সমাজসেবী ও শিক্ষানুরাগী মাসুদ আহমেদ,
 বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জিল্লুর রহমান জিলু, বর্তমান সহসভাপতি শাহ মো. হেলাল, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমএ কাদির,গহরপুর ব্লাড ফাইটার্সের সাধারণ সম্পাদক ও আজিজপুর উচ্চ বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক মুহিত আল মেরাজ, গহরপুর ব্লাড ফাইটার্সের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও আলহাজ্ব আব্দুল গফুর শিশু বিদ্যানিকেতন শিক্ষক আবিদ আহমদ প্রমূখ।
রুকন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন ইউকের চেয়ারম্যান আলী আহমদ নেছাওর ও তাঁর পরিবারের সার্বিক প্রচেষ্টায় ১৫০ শতক জমির উপর নির্মিতব্য এই প্রকল্পটি সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য আশার আলো হয়ে উঠবে।

সংশ্লিষ্ঠ সুত্রে জানাগেছে, এই প্রকল্পের আওতায় থাকছে এতিমখানা – যেখানে অনাথ শিশুদের শিক্ষা, বাসস্থান ও যত্নের ব্যবস্থা থাকবে।
হাফিজিয়া নূরানী মাদ্রাসা – কুরআন শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষার সুযোগ থাকবে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র – যেখানে দরিদ্র মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পাবে।
কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র – কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
বৃদ্ধাশ্রম – যেখানে বয়স্ক ও অসহায় ব্যক্তিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় থাকবে।

ইতোমধ্যে প্রকল্প এলাকায় রাস্তা নির্মাণ, মাটি ভরাট, বিদ্যুৎ সংযোগ, বৃক্ষরোপণ এবং বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর সফল বাস্তবায়ন হলে এটি শুধুমাত্র স্থানীয় জনগণের জন্য নয়, বরং জাতীয় পর্যায়েও দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী।

প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে অতিথিরা বলেন, এটি শুধু একটি দাতব্য সংস্থা নয়, বরং একটি সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মসূচি যা আমাদের সমাজকে বদলে দিতে পারে। এজন্য প্রবাসী, স্থানীয় ও সমাজের সকল বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রকল্পের চেয়ার যুক্তরাজ্য বিশিষ্ট সমাজসেবী আলী আহমদ নেছাওর জানান, মানবতার সেবায় নিবেদিত ‘আত-তাকওয়া’ প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে এটি দেশের সামাজিক কল্যাণে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে। সমাজের দুঃস্থ, অসহায় ও বঞ্চিত মানুষদের জন্য এটি আশার আলো হয়ে উঠবে। এখন প্রয়োজন সকলের সহযোগিতা ও সহমর্মিতা, যাতে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবে রূপ নেয় এবং হাজারো মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনে।

Shah Md Helal

আমি শাহ মোঃ হেলাল, একজন সাংবাদিক এবং বালাগঞ্জের আওয়াজ-এর CEO। প্রতিনিধি দৈনিক কালবেলা ও সবুজ সিলেট। সহসভাপতি বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাব,সিলেট।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন