শিরোনাম

সিলেট নগরীতে রিকশা ও সিএনজি ভাড়ার নৈরাজ্য, পুলিশের উদ্যোগে ভাড়া তালিকা প্রণয়ন

: বালাগঞ্জের আওয়াজ
প্রকাশ: ২০২৫-১০-০১
ছবি সংগৃহীত

সিলেট নগরীতে দীর্ঘদিন ধরে রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের ভোগান্তি অব্যাহত রয়েছে। যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন—নির্ধারিত ভাড়ার কোনো তালিকা না থাকায় প্রতিদিনই অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। ব্যস্ত সড়কগুলোতে কিছু রিকশাচালক যাত্রীদের কাছ থেকে স্বাভাবিক ভাড়ার চেয়ে ৩০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেশি দাবি করেন।

একই চিত্র দেখা যায় সিএনজি অটোরিকশার ক্ষেত্রেও। নগরীর ভেতরে যেকোনো যাত্রায় শুরুতেই ভাড়া চাওয়া হয় কমপক্ষে ১০০ টাকা। রাত বা বৃষ্টির সময় এ ভাড়া আরও বেড়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে যাত্রার আগে ভাড়া নির্ধারণ করলেও গন্তব্যে পৌঁছে চালকেরা বাড়তি ভাড়া দাবি করেন। প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের অশালীন আচরণেরও শিকার হতে হয়। যদিও সব চালক এমন আচরণ করেন না—নিয়ম মেনে ভাড়া নেন অনেকেই।

২০১৫ সালে সিটি কর্পোরেশন নগরের ৫১টি মোড়ে রিকশাভাড়ার তালিকা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু চালকদের অনীহা এবং তদারকির অভাবে সেই উদ্যোগ কার্যকর হয়নি। এক দশক পেরোলেও এখনো এর সুফল পায়নি নগরবাসী।

মজুমদারী এলাকার বাসিন্দা রফিক আহমদ বলেন, “বৃষ্টির রাতে জিন্দাবাজার থেকে মজুমদারী আসতে এক চালক ২০০ টাকা ভাড়া চাইলে অন্য একজন স্বাভাবিক ভাড়ায় নিয়ে আসেন। সমস্যা হলো—যাত্রীরা জানেই না কোন রুটে কত ভাড়া হওয়ার কথা।”

অন্যদিকে মদিনা মার্কেটের বাসিন্দা খাদিজা বেগম অভিযোগ করেন, “রিকশায় ওঠার আগে ৪০ টাকায় চুক্তি করলেও নামার সময় ৫০ টাকা দাবি করা হয়। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে।”

করোনাকালে যাত্রী সীমিত রাখার অজুহাতে সিএনজি চালকেরা এক দফা ভাড়া বাড়িয়েছিলেন। পরবর্তীতে পাঁচ যাত্রী নেওয়ার অনুমতি ফিরলেও বাড়তি ভাড়া আর কমানো হয়নি। ফলে যাত্রীদের কাছে ভাড়া বৃদ্ধি এখন যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে।

এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) নগরীর প্রতিটি রুটে সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এসএমপি কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী জানিয়েছেন, “অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, যাত্রীদের জিম্মি করে ভাড়া নেওয়া এবং অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে ওঠার অভিযোগ রয়েছে। এসব নিয়ন্ত্রণে ন্যায্য ভাড়ার তালিকা প্রণয়ন করা হবে, যাতে জনগণ জানতে পারে কোন রুটে কত ভাড়া।”

তবে নগরবাসীর দাবি, শুধু সিএনজি নয়, রিকশার ভাড়াও তালিকাভুক্ত করতে হবে। তাদের মতে, কেবল ভাড়া নির্ধারণ করলেই সমস্যার সমাধান হবে না; পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের কার্যকর তদারকি ছাড়া যাত্রী হয়রানি বন্ধ করা সম্ভব নয়।

 

error: Content is protected !!